সাজ্জাদ মাহমুদ সুইট, রাজশাহী।
“পার করেছি আঠারো, পেরিয়ে যাবো পাহাড়ও” এই স্লোগান কে ধারন করে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় আঠারো বছর উত্তীর্ণ ৩০ জন স্বপ্নসারথি কিশোরীকে কর্মসূচির পক্ষ থেকে গ্রাজুয়েট সনদপত্র, শুভেচ্ছা উপহার ও ফুল দিয়ে সন্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ শে সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩ টায় এ উপলক্ষে বাঘা উপজেলা নির্বাহি অফিসারের সভাকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি কে স্বপ্ন সারথি দলের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরন করে নেওয়া হয়। একই সাথে অংশগ্রহনকারীদেরও কর্মসূচির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরন করে নেওয়া হয়। এরপর স্বপ্নসারথির ইতিহাস ও অগ্রগতি সম্বলিত “গ্রাজুয়েট ফোল্ডার ” অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কর্মসূচিতে বাঘা উপজেলা কর্মকর্তা মোঃ মোমিনুল ইসলাম এর পরিচালনায় এবং সিও ( সেলপ) মোঃ মমিনুল ইসলাম এর সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাঘা উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাম্মি আক্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ( ভূমি) সাবিহা সুলতানা ডলি।
স্বপ্নসারথি দলের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনুভূতি মূলক বক্তব্য রাখেন গ্র্যাজুয়েট সন্মাননা প্রাপ্ত কিশোরী কলিগ্রামের সুর্মি আক্তার, আসমাউল হুসনা, মনিগ্রামের জয়া রানী দাস, বাজিতপুর নিশ্চিন্তপুরের সালেহা খাতুন।
অনুভূতি পর্বে অনেক কিশোরী আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়েন।
মনিগ্রামের আনজিলা আক্তার জ্যোতি ” স্বপ্ন সারথি” নিয়ে স্বরচিত মনোমুগ্ধকর কবিতা আবৃত্তি করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি)সাবিহা সুলতানা ডলি বলেন, ব্র্যাকের উদ্যোগে চমৎকার আয়োজন। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মেয়েদের এগিয়ে যেতে হবে।স্বপ্নপূরনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার প্রবল ইচ্ছে শক্তি। বাল্যবিয়ে একজন কিশোরীর সকল আশা আকাঙ্খা ধ্বংস করে দেয়। তাই আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাশীল জীবন গঠনে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন কোন কিছুতেই ভেঙে পড়লে চলবে না। সাহস এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
এ সময় প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাম্মি আক্তার তার বক্তব্যে বলেন, বাল্যবিয়ে মুক্ত জীবন গঠনে ব্র্যাকের এই কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। সারা বিশ্বে যখন মেয়েরা এগিয়ে তখন আমাদের দেশের মেয়েদের বাল্যবিয়র আশংকা নিয়ে দিন পার করতে হয়। এই অবস্থা থেকে মেয়েদেরকে আরও বেশি সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন সত্যিকারের স্বপ্ন পূরনের জন্য ১৮ পরবর্তী সময়ে কিশোরীদের পড়াশোনা চলমান রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আয়বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষন বাস্তবায়নে দূত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ভবিষ্যতে জীবনের লক্ষ্য পূরনে আজকের এই সন্মাননা কিশোরীদের জীবনে নতুন প্রেরনা হয়ে থাকবে।প্রধান অতিথি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আজকের এই কিশোরীরা একদিন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে শিক্ষা সমাপনী গ্রাজুযেট খেতাব নিয়ে দেশ ও জাতির কল্যানে নিজেদের আত্মনিয়োগ করবেন।
পরিশেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সন্মাননা পত্র বিতরণ, শুভেচ্ছা উপহার এবং আপ্যয়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।