1. towkir.skit@gmail.com : admin :
  2. towkir29@gmail.com : adminrafiq :
বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন
Title :
দাউদকান্দিতে কিস্তির চাপ সহ্য করতে না পেরে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা ভোলাহাট মানবসেবা সংগঠনের ১ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সেচ্ছাসেবী মিলনমেলা অনুষ্ঠিত মহাদেবপুরে সাংবাদিক সাজুর উপর সন্ত্রাসী হামলা গাইবান্ধায় জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড ও কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিলেট – মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীতকরন ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবিতে দেবিদ্বারে জামায়াতে ইসলামির মানববন্ধ দাউদকান্দি উপজেলা শ্রমিক দল গৌরীপুর বাজার যানজট মুক্ত রাখতে পরিশ্রম করে যাচ্ছে ঘোষনগর ও আমাইড় ইউনিয়ন ওয়ার্ড বিএনপির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা পলাশবাড়ী থানা পরিদর্শন করলেন জেলা পুলিশ সুপার নিশাত এ্যঞ্জেলা নিজের শেষ সম্বল একটি কিডনি বিক্রি করে বসবাস করতে চান মহাদেবপুরের সুলতান মাহমুদ শহিদুল ইসলাম বাবুলের মুক্তির দাবিতে গোমস্তাপুরে কৃষকদলের আনন্দ র‍্যালি ও আলোচনা সভা

রাঙ্গুনিয়া বৃহত্তর রাজানগরের রাজা প্রথা ও জনপদের নামকরণ সংকলন

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫
  • ৭৮ Time View

এই জনপদের বাসিন্দারা চাকমা, মগ ও বাঙালিদের মিশ্র সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে। মোগল ও ইংরেজ আমলে এই এলাকাটি বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাকিস্তান আমলে এটি বর্তমান চট্টগ্রাম জেলার আওতাভুক্ত হয়।

১৭৩৭ সালে চাকমা সম্প্রদায়ের ৪০তম রাজা শুকদেব রায় রাঙ্গুনিয়ার শুকবিলাশ এলাকা থেকে এসে এই রাজবাড়ি স্থাপনের কাজ শুরু করেন। তখন থেকেই এই এলাকার নাম হয় রাজানগর। রাজবাড়ির পাশে তিনি একটি হাট স্থাপন করেন, যা বর্তমানে রাজার হাট নামে পরিচিত।

রাজার হাটের দুই পাশে দুটি দিঘি খনন করা হয়, যা এখনো বিদ্যমান। দিঘির উত্তর পাড়ে ১৭৫৭ সালে একটি মন্দির এবং পাশাপাশি একটি মসজিদ স্থাপন করা হয়, যা গোলাম খাঁর মসজিদ নামে পরিচিত। মসজিদটি বর্তমানে পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে এবং মন্দিরটিও এখনো রয়েছে।

রাজবাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে একটি ফুলের বাগান করা হতো, যেটি বর্তমানে ফুলবাগিচা নামে পরিচিত।

নিঃসন্তান রাজা শুকদেব রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর পালকপুত্র শের দৌলত খাঁন ৪১তম রাজা উপাধি লাভ করেন। ইংরেজ শাসনামলে রাজাদের ‘খাঁন’ উপাধি প্রদান করা হতো। এরপর তাঁর বংশধরেরা—রাজা জানবক্স খাঁন, তব্বর খাঁন, জব্বর খাঁন ১৮১৪ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন।

জব্বর খাঁনের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ধরম বক্স খাঁন ৪৫তম রাজা হন। তাঁর স্ত্রী ছিলেন রানী কালিন্দী দেবী। রাজা ধরম বক্স ও রানী কালিন্দীর শাসনামলে জনপদে হাট-বাজার, মসজিদ, মন্দির, বৌদ্ধ বিহার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাটসহ সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হয়।

রাজা ধরম বক্সের মৃত্যুর পর রানী কালিন্দী ৪৬তম রাজার উপাধি লাভ করেন। তিনি টানা ৪৩ বছর রাজবাড়িতে বসে খাজনা আদায় করতেন। রাজাদের ইতিহাসে তিনি ছিলেন একমাত্র নারী রাজা। তাঁর শাসনামলে সব সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসতেন।

ধামাইর হাট

রাজবাড়ি থেকে দেড় মাইল পূর্বে রাজা ধরম বক্স তাঁর নামে ধরম হাট স্থাপন করেন, যা সময়ের বিবর্তনে ধামাইর হাট নামে পরিচিত হয়। ধামাইর হাটের অর্ধ কিমি উত্তর-পূর্বে রাজা কৃষিকাজের জন্য জমি লিজ দিতেন। বর্তমানে সেখানে রাজার বিল নামে একটি বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ রয়েছে।

রাজা ধরম বক্স ওই বিলের তীরে, বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী মৌলার বাড়ি ও সৈয়দ বাড়ির মাঝখানে একটি বিশাল পুকুর খনন করেন। এটি এখন ধরম পুকুর নামে পরিচিত।

রানীর হাট ও ইসলামপুর

রাজবাড়ি থেকে আট মাইল উত্তরে রানী কালিন্দী একটি বাজার স্থাপন করেন, যা বর্তমানে রানীরহাট বাজার নামে পরিচিত। বাজারের উত্তর-পূর্বে রানী কৃষিকাজের সুবিধার্থে বসতি গড়েন এবং সেই এলাকাটি কালিন্দপুর নামে পরিচিত হয়, যা লোকমুখে কালিপুর নামে প্রচলিত ছিল। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে এলাকাটির নাম পরিবর্তন করে ইসলামপুর রাখা হয়।

রানীর হাট থেকে পারুয়া হয়ে কাপ্তাই রোড পর্যন্ত সড়কটি রানী কালিন্দী নির্মাণ করেন, যা বর্তমানে কালিন্দী রানী সড়ক নামে পরিচিত।

১৮৬৪ সালে রানী কালিন্দী রাজবাড়ির পাশে একটি বৌদ্ধ বিহার স্থাপন করেন এবং মায়ানমার থেকে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মহামুনি মেলার সূচনা করেন। এই মেলা প্রতিবছর এখনো বিহারের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়।

১৮৭৩ সালে রানী কালিন্দীর মৃত্যু হয়। বর্তমানে রাজবাড়ির পাশে স্থাপিত বৌদ্ধ বিহারে রাজা ধরম বক্সের পাশে রানী কালিন্দীর সমাধি রয়েছে।

নিঃসন্তান রানী কালিন্দীর মৃত্যুর পর তাঁর ভগ্নীপতি হরিশচন্দ্র রায় ৪৭তম রাজা হন। ১৮৭৪ সালে তিনি সেনাবাহিনীসহ রাঙ্গামাটিতে চলে যান এবং তখন থেকে রাজবাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে।

হরিশচন্দ্র রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ভূবন মোহন রায় ৪৮তম রাজা হন। এরপর তাঁর পুত্র নলিনাক্ষ রায় ৪৯তম রাজা এবং তাঁর পর ব্যারিস্টার ত্রিদিব রায় ৫০তম রাজা হন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের পক্ষ নেন এবং পরবর্তীতে তিনি পাকিস্তানে চলে যান। পাকিস্তান সরকার তাঁকে আজীবন মন্ত্রী ঘোষণা করে। ২০১২ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।

স্বাধীনতার পর রাজপ্রথা বিলুপ্ত হলেও তাঁদের বংশানুক্রম অনুসারে বর্তমানে ত্রিদিব রায়ের পুত্র ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় ৫১তম রাজা হিসেবে রাঙ্গামাটি রাজবিহারে বসবাস করছেন। রাজবাড়ির পাশে তাঁর নামে একটি বেসরকারি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তথ্য সংকলন – এমদাদুল ইসলাম নয়ন
তথ্য সূত্র – রাঙ্গামাটি রাজ বিহার-প্রতিনিধি – সৈয়দ মোঃ ইমরান হোসেন – রাংগুনিয়া

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 somoyermullo
Developed By : Bongosoft.org