বগুড়ার শিবগঞ্জে রং আর তুলির আঁচড় দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। পূজার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা ততই বাড়িয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি হিন্দু গ্রামগুলোতে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। এবার এই উপজেলায় মোট ৫৪টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শারদীয় দুর্গোৎসব পালনে প্রস্ততি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
শরৎ কালের আশ্বিন মাসে অনুষ্ঠিত হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা বা দুর্গোৎসব। পূজার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা ততই বেড়ে যাচ্ছে। দিন রাত তারা প্রতিমা তৈরিতে সময় ব্যয় করে চলছে শেষ সময়ের রং আর প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ। একটুও বিশ্রামের ফুরসত পর্যন্ত নেই তাদের।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মন্দিরে মন্দিরে প্রতিমাতে রং এর কাজে ব্যস্ত শিল্পীরা। মূলত প্রতিমা তৈরির শুরুর দিন থেকেই হিন্দু সমাজের মাঝে একধরনের আনন্দ ও উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়, শেষ হয় প্রতিমা বির্সজনের মধ্য দিয়ে।
উপজেলার সাদুল্যাপুর গ্রামের প্রতিমা শিল্পী হীরেন চন্দ্র অধিকারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার তিনি মোট ৭টি প্রতিমা তৈরি করছেন। তবে প্রতিমা তৈরির সরঞ্জাম যেমন, রং, সাজ-সজ্জার সরঞ্জাম, মাটি, খড়, কাপড়, সুতলী, পেরেক, বাঁশ ও কাঠের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খরচ বেড়েছে বলে তিনি জানান। প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। ১৬ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রত্যেকটি প্রতিমার মজুরী নিয়ে থাকেন তিনি। কিন্তু এবার পূজা আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পূজার আয়োজকরাও বেশি দামে প্রতিমা তৈরি করে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, ২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সূচনা হবে। তবে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ৯ অক্টোবর বুধবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে। ১২ অক্টোবর শনিবার বিজয়া দশমীতে, দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ বছরের এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। হিন্দুধর্মের পঞ্জিকা মতে এবার দেবী দূর্গা দোলায় আগমন করবেন এবং ঘোড়ায় গমন করবেন।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুবির কুমার দত্ত জানান, উপজেলাব্যাপী গত বছর ৬০টি দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার ৬ টি কমিয়ে ৫৪ টি মন্ডপে দুর্গা পূজা আয়োজনের প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ। প্রতিবারের ন্যায় এবারও সরকারী সহোযোগিতা পেয়েছে প্রতিটি পূজা মন্দির কমিটি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, পূজা চলাকালে মন্ডপ গুলোতে নিরাপত্তা এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ ও আনসার সদস্য ছাড়াও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন। যে সকল আয়োজকরা এবার পূজা করছেন না তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তারা মন্দির সংস্কার সহ বিভিন্ন সমস্যার কথা বলছেন।