মর্তুজা শাহাদত সাধন, নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর আত্রাই থানার কালকাকলী স্কুল এন্ড কলেজের মাঠের সিমানা প্রাচীর ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে মো. আবদার হোসেন নামের এক আওমীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো. মাজেদুর রহমান জেলা প্রশাসক বরাবর আবদার হোসেনসহ ২৮জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জমি ক্রয় ও প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পর হতেই এলাকার একদল চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী তাকে নানাভাবে প্রতিষ্ঠানের কাজে বাধা সৃষ্টি করে আসছিলো। এরপর গত ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের ৫ই আগষ্ট বিকেল আনুমানিক ৫ টার সময় দেশের চলমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অচল অবস্থার প্রেক্ষাপটের সুযোগ নিয়ে তারা আকস্মিকভাবে বিদ্যালয় মাঠটির সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করে এবং সকল বনজ গাছগুলো কেটে ফেলে। এমতাবস্থায় ৬ই আগষ্ট দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সেই সময়ের পরিস্থিতিতে তারা জবর দখল করে ঈদগাহ তৈরী শুরু করলে সেনাবাহিনীর উপস্থিত হয়ে স্থগিত করে চলে যান।
এরপরও তারা অবৈধভাবে জোরপূর্বক জবর দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। যার ফলে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি প্রাণহানিসহ নাশকতার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এর কারণে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। আমার হক দালিলিক স্বত্বদখলীয় সম্পত্তিতে তারা কৌশলে তাদের দখলে নিতে স্পর্শকাতর ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে ঈদগাহ মাঠ বানানোর অপকৌশল হিসেবে আমার নিকট চাঁদা দাবী করছে ও আমাকে নানাবিধ হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে আসতেছে এবং প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিশুদের মাঠে খেলাধুলা ও তাদের দৈনন্দিন সমাবেশসহ অন্যান্য কার্যকলাপ ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশসহ শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মাজেদুর রহমান বলেন, আমার নিজ উদ্যোগে শিক্ষার মান উন্নত ও উন্নত সমাজ গঠনে ও বেকারত্ব দূরীকরণের নিমিত্তে ১৯৯১ সালে কালকাকলী স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত করে অদ্যবধি সুনামের সহিত পরিচালনা করে আসতেছি। বর্তমানে প্রায় ১২০০ জন শিক্ষার্থী ও প্রায় ৫০ জনের অধিক শিক্ষক ও কর্মচারী আছে। অত্র বিদ্যাপিঠে পাঠদানের কার্যক্রম পরিচালনাসহ নানা অনুষ্ঠান ও দৈনন্দিন সমাবেশ পরিচালনার জন্য গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ১০ আগস্ট মো. মাহবুবার রহমান তার স্বত্বদখলীয় ৩০ শতক জমি আমার নিকট দানপত্র রেজিঃ দলিল মূলে হস্তান্তর করে। যাহা গত ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন ২৩২৮২ নং রেজিষ্ট্রি বিনিময় দলিলমূলে মো. মাহবুবার রহমানের ভাই মোল্লা সিরাজুল ইসলাম স্বত্ববান ও দখলীকার হয়। এরপর উক্ত সম্পত্তিসহ আরও সম্পত্তি গত ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ২৭ এপ্রিল ৮৭৯৭ নং দলিলমূলে মোল্লা সিরাজুল ইসলাম তার ভাই মো. মাহবুবার রহমান বরাবর হস্তান্তর করে। এরপর মো. মাহবুবার রহমান গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ১০ আগস্ট আমার নিকট হস্তান্তর করে। এরপর আমি ওই সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠানের মাঠ হিসাবে ব্যবহার করে আসতেছি এবং ওই মাঠটির চারপার্শে টিন দিয়ে বাউন্ডারী সীমানা প্রাচীর করে তার চারদিকে শোভা বর্ধনের জন্য ৬০০ বনজ ও সুপারী গাছ রোপন করি। যা তারা দখলের চেষ্টা করতেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবদার হোসেন বলেন, ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমি দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। আমি এর সাথে সংপৃক্ত নয়।