আপেল মাহমুদ রাঙ্গা বাগমারা প্রতিনিধি
বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়া এবং তার ছোট ভাই আউচপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ডি.এম শাফিকুল ইসলাম শাফির বিরুদ্ধে এবার দেড় বছর আগে মৃত ব্যক্তি দিল পাঁচ লাখ টাকার মাছ লুটের অভিযোগ। গত ২৯ সেপ্টেম্বর আউচপাড়া ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের মৃত মুন্সি জহির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হালিম শামিম নামে স্বাক্ষর করা একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পত্রে ওই মৃত ব্যক্তির নামে ০১৯১৬-৫১২৬৫৬ নম্বরের একটি মোবাইল ফোনও ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগকারি আব্দুল হালিম শামিম প্রায় দেড় বছর আগে মারা গেছেন। এই ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল প্লাটফর্মে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমি মো: আব্দুল হালিম শামিম এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, আউচপাড়া ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর মৌজায় আর.এস ১ ও ৪ নং খতিয়ানে মোট চারটি দাগে দুই একর ৬৫ শতক আয়তনের একটি পুকুর উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক ২০২৪-২০২৬ সাল পর্যন্ত ইজারা গ্রহন করিয়া মাছ চাষ করিয়া আসিতেছি। গত ১০ আগস্ট বাগমারা উপজেলা বিএনপির ওআহ্বায়ক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়া এবং তার ছোট ভাই আউচপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ডি.এম শাফিকুল ইসলাম শাফিসহ দলীয় কিছু লোকজন পুকুরটি দখল করিয়া প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মাছ ধরিয়া নেয়। বর্তমানে আমি উক্ত পুকুরে মাছ চাষ করিতে গেলে তারা আমাকে মারধর করিবে বলিয়া শাসন গর্জন করিতেছে এবং নানা রকম হুমকি প্রদান করিতেছে।’
এ বিষয়ে মুন্সি জহির উদ্দিন বলেন, এটি একটি ভূয়া অভিযোগ। কারণ তার ছেলে আব্দুল হালিম শামিম প্রায় দেড় বছর আগে মারা গেছে। আর তিনি এখনও জীবিত রয়েছেন। অথচ ওই অভিযোগ পত্রে তাকে মৃত উল্লেখ করা হয়েছে আর তার মৃত ছেলেকে জীবিত দেখিয়ে তার স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। যারা এই ধরণের ঘৃন্য কাজ করেছে তাদের চিহ্নি করে দ্রæত তাদের গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিএনপির আহ্বায়ক ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়া বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৪, বাগমারা আসনে একাধিক ব্যক্তি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তাদের মধ্যে কারানির্যাতিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসাবে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। এ কারণে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ চক্রান্ত করে তার বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে এই ধরণের বিভ্রান্তিকর অভিযোগ দিয়ে দলের হাই কমান্ডের কাছে তার সুনাম ও জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছে। অপরদিকে এই ধরনের ভূয়া অভিযোগ দিয়ে যারা অপপ্রচার চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন আউচপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ডি.এম শাফিকুল ইসলাম শাফি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান বলেছেন, ঘটনাটি সোশ্যাল প্লাটফর্মে ভাইরাল হওয়ার পর তারা বিষয়টি অবগত হয়েছেন। তবে মৃত ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে ওই অভিযোগটি তাদের দপ্তরে কে দাখিল করেছে তা সিসি ক্যামেরা যাচাই করে তাকে সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। অপরাধী সনাক্ত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।