আমির উদ্দিন বাবু পোরশা(নওগাঁ)প্রতিনিধি
নওগাঁর পোরশায় ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমি ওয়াক্ফ ষ্টেটের দাবী করে প্রতিপক্ষের করা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। মঙ্গলবার উপজেলার পোরশা গ্রামের মৃত আসাদ সাহ এর ছেলে গোলাম মোস্তফা শাহ্ এর বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে আসাদ শাহ্ এর বড় ছেলে ছাইদ শাহ্ লিখিত বক্তব্যে বলেন, পোরশা গ্রামের আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ একজন জমিদার ছিলেন। আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ ২৪/০৪/১৯২১ইং তারিখে ১৯৮৭নং দলিলে তার ১৪২.২৩একর জমি ওয়াক্ফ রেজিস্ট্রি করে দেন। উপজেলার সুহাতী মৌজায় সিএস ৮০নং খতিয়ানে ১৪২.২৩একর সম্পত্তি আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ এর অবিভক্ত বাংলা প্রদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারের অধিন সরাসরি রেভিনিউ প্রদেয় জমিদারী স্বত্বে স্বত্বদখলীয় সম্পত্তি থাকা কালে সিএস জরিপের রেকর্ডের পূর্বে গত ইং ০৮/০৪/১৯২১ তারিখে রেজিস্ট্রিকৃত ১৯৮৭নং ওয়াক্ফনামা দলিল মূলে উক্ত সম্পত্তি আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ ওয়াক্ফ স্টেট স্থাপন করে তার নামে হস্তান্তর করেন এবং গত সিএস জরিপের চূড়ান্ত খতিয়ান প্রস্তুত হওয়ার পূর্বেই উক্ত ওয়াক্ফ স্টেট হতে ৫৬.৮২একর জমি আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ নিজেই মতোয়াল্লি হয়ে জীবিত থাকা অবস্থায় প্রজাপত্তন দেন। আর সেগুলো জমি সিএস, এসএ ও আরএস খতিয়ানে প্রজাদের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। বাঁকী ৮৫.৪১একর পরবর্তী মোতয়াল্লি দলিলের শর্ত মোতাবেক সাইদ শাহ্ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট প্রজাপত্তন দেন এবং খাজনা আদায় করেন। দলিলের শর্ত মোতাবেক পরবর্তী মোতয়াল্লি সাইদ শাহ্ মৃত্যুর পর কাশেম শাহ্ মোতয়াল্লি নিযুক্ত হন। কাশেম শাহ্ বাংলা ১৩৫৫সন হতে বাংলা ১৩৬২সন পর্যন্ত প্রজাপত্তনের জমি বিভিন্ন প্রজাদের নিকট হতে খাজনা আদায় করেন। জমিদারী আইন বিলুপ্ত হওয়ার পর মোতয়াল্লি মোহাম্মদ কাশেম শাহ্ বিগত ১৩/১১/১৯৬৩ইং তারিখে ১২৭৮৭নং ডায়েরী মূলে বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের অফিসে আবেদন দিয়ে জমিদারী শর্তের সম্পতি বাংলা ১৩৬৩সনের ১ বৈশাখ হতে হুকুম দখল দ্বারা সরকার খাস প্রজাদের নিকট হতে খাজনা গ্রহন করেছেন। কাশেম শাহ্ মোতয়াল্লী থাকা অবস্থায় ৮৫.৪১একর জমি এসএ ও আরএস রেকর্ড বিভিন্ন প্রজাদের নামে হয়েছে এবং খাজনা সরকার নিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ছাইদ শাহ্ আরো বলেন, উপজেলার সুহাতি মৌজায় ১৪২.২৩একর জমির মধ্যে ১১৪.৭৪একর জমি বিভিন্ন লোক প্রজাপত্তন নিয়ে আজ পর্যন্ত সকলেই ভোগ দখল করে আসছেন। আরএস ৬৫নং খতিয়ানে ২৭.৪৯একর আসাদ শাহ্ নামে রেকর্ড হয়েছে এবং সরকারের নিকট নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু বিগত ২০১৪ইং সনে সাবেক সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদারের নেতৃত্বে শরিফউদ্দীন শাহ্ (গেনা হুজুর) ওয়াক্ফ স্টেটের জমি দাবী করে জোর পূর্বক স্বৈরাচারী কায়দায় তাদের চাষাবাদকৃত ধান জমি থেকে কেটে নিয়ে বাড়ির পাশে খলায় রাখা প্রায় ১ হাজাার ২০০মন ধান লুটপাট করে নিয়ে যায়। পতিত আওয়ামী লীগ থাকা অবস্থায় জোর করে তাদের জমির ধান লুটপাট করে খেয়েছেন বলে জানান। গেনা হুজুর মৃত্যুর পর এখন স্থানীয় জনৈক নজরুল ইসলাম শাহ্ নিজকে ওয়াক্ফ ষ্টেটের মতোয়াল্লী এবং জমি তার দাবী করে জবর দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কয়েকদিন আগে জমি নিজের দাবি করে সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি সে সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ করছেন। এসময় আসাদ শাহ্ এর ছেলে মোস্তফা শাহ্ সহ তাদের সকল ওয়ারিশগণ উপস্থিত ছিলেন।