মর্তুজা শাহাদত সাধন, নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর মান্দায় বাল্যবিবাহ করার অপরাধ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সাড়ে ১৬ বছর বয়সী নিজ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রী দোলাকে বিয়ে করার পর অস্বীকার করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। সে মামলায় র্যাব ও মান্দা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোরের বনপাড়ার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃত প্রধান শিক্ষক আকরাম মন্ডল উপজেলার হাজীগোবিন্দপুর ফকিরপাড়া গ্রামের আফসার মন্ডলের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন একজন দুশ্চরিত্র প্রকৃতির লোক। তার পূর্বের ২টি স্ত্রী আছে। শিক্ষার্থী দোলা স্কুলে অবস্থানকালে সে তাকে তার কক্ষে ডাকিয়া নিয়া বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দিত। সে তার প্রস্তাবে রাজি না হলে সে তাকে পরীক্ষায় ফেল করানোসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকী দিত। এ গুলো ঘটনা পরিবারকে জানালে তার বাবা স্থানীয় লোকজনসহ তাকে একাধিকবার নিষেধ করেছে। কিন্তু সে নিষেধ না মেনে ওই ছাত্রীকে আরো বেশি উত্যক্ত করতে থাকে।
এরমধ্যে গত ২৬ মার্চ সকাল অনুমান সাড়ে ৮ টার দিকে দোলা স্কুলের ২৬ শে মার্চ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। স্কুলে অবস্থানকালে সকাল অনুমান ১০ টার দিকে সে দোলাকে বিয়ের প্রলোভনে তার বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেদিন থেকে তাকে তার বাড়ীতে রেখে তাকে বিয়ের প্রলোভনে জোর করে ধর্ষণ করে। পরে তাকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করলে সে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়া তার বাড়ীতে রেখে বার বার ধর্ষন করে। পরে তার বাড়ীতে দোলা থাকার সময় ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা অনুমান সোয়া ৬ টার দিকে বিয়ের জন্য বললে সে বিয়ে করতে পারবে না বলে অস্বীকার করিয়া বাড়ী থেকে বের করে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ছাত্রীর বাবা এমদাদুল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি অশিক্ষিত মানুষ। আমাদের এলাকার মুনসুর কাজীর সহযোগী আলম এসে বিয়ে রেজিস্টারি করে আমাকে যেখানে স্বাক্ষর দিতে বলে সেখানে আমি স্বাক্ষর দিই। এরপর আমি কয়েকবার তার কাছে গিয়ে বিয়ের নকল চাইলে বিভিন্নভাবে তালবাহানা করে আমাকে নকল দেননি। এরমধ্যে স্থানীয়দের করা অভিযোগের জন্য গতকাল আমাকে ডাকলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে আমার মেয়েকে বিয়ে দিইনি বলতে বাধ্য করে। আমার মেয়েকে যদি বিয়ে না করে তাহলে সে তাকে ধর্ষণ করেছে। তাই আমি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছি।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মুনসুর রহমান বলেন, মামলার পর থেকে সে পলাতক ছিল। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে থানা পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে নাটোরের বনপাড়া থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।