মোঃ খায়রুল ইসলাম হৃদয় গজারিয়া(মুন্সিগঞ্জ)প্রতিনিধি :
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ ও দলিল সংক্রান্ত নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কয়েক বছর পার হলেও অনেক উপকারভোগী এখনো সরকারি ঘরের দলিল পাননি। আবার কেউ কেউ ঘর পাওয়ার আশ্বাসে অর্থ লেনদেন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মাঝে সরকারি খরচে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে ঘর বন্টন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ছিল না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। কেউ ঘর পেয়েও দলিল পাননি, আবার কেউ শুধু দলিল পেয়েছেন কিন্তু ঘর পাননি
রবিবার (২৭ জুলাই ২০২৫) সকাল ১০টায় বাউশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ তুলে ধরেন মধ্যম কান্দি গ্রামের শহীদুল্লাহ ব্যাপারীর ছেলে আল আমিন, মৃত অফিজ মিয়ার ছেলে ইসলাম, মৃত খোকন মিয়ার স্ত্রী মাকসুদা বেগমসহ অন্তত ৭–৮ জন ভুক্তভোগী। তারা জানান, ২০২১ সাল থেকে তারা ঘরে বসবাস করছেন কিন্তু এখনো তাদের দলিল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। অনেকে অভিযোগ করেন, ঘর পেতে হয়েছে টাকা লেনদেন।
যদিও এই লেনদেনের নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা লিখিত অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, একই ইউনিয়নের কুমারিয়া গ্রামের সামসু মিয়ার ছেলে নাজির উদ্দিন, মৃত আব্দুল বাতেনের ছেলে শামসু মোল্লা ও মোস্তফা জামানের স্ত্রী জোহরা বেগমকে ঘরের দলিল প্রদান করা হলেও এখনো তাদের ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বাউশিয়া ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুমন মিয়া জানান, মৌখিকভাবে একাধিক অভিযোগ তারা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তবে কমিটি এখনো কাজ শুরু করেনি।
বাউশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, ঘর বাস্তবায়নের সময় বিভিন্ন ইউনিয়নের উপকারভোগীদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তারা ঘর বুঝে না নেওয়ায় সেসব ঘর জেলা প্রশাসকের অনুমতিতে স্থানীয় অসহায়দের দেয়া হয়। তবে কাউকে ঘর দেয়ার আশ্বাসে অর্থ নেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল আলম বলেন,আশ্রয়ণ প্রকল্পে উপকারভোগীদের জীবনমান যাচাইয়ের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখনো ঘর বরাদ্দে কোনো অনিয়ম বা অর্থ লেনদেনের লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা দাবি করছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে এবং প্রকৃত উপকারভোগীরা বঞ্চিত হবেন।