
“
মোঃ আসাদুজ্জামান সরদার, খুলনা : দক্ষতা উন্নয়ন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রকল্পের আওতায় দেশের তরুণদের প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতায় গড়ে তুলছে।
সম্প্রতি খুলনা টিটিসি অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি—মালয়েশিয়ার CIDB Malaysia কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশের প্রথম সরকারি স্কিল টেস্ট সেন্টার হিসেবে। ফলে এখান থেকে প্রশিক্ষিত কর্মীরা এখন আন্তর্জাতিক মানের সনদ নিয়ে বিদেশে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন।
বর্তমানে খুলনা টিটিসিতে চলছে রেগুলার কোর্স, দেশ-বিদেশ প্রকল্প, ASSET প্রকল্প (Accelerating and Strengthening Skills for Economic Transformation) এবং SICIP প্রকল্প (Skills for Industry Competitiveness and Innovation Program) এর আওতায় বিনামূল্যে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ কোর্স। এসব প্রকল্পের লক্ষ্য হলো দেশের যুব সমাজকে আধুনিক প্রযুক্তি, উৎপাদন ও শিল্প খাতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। প্রশিক্ষণ সফল ভাবে শেষ করলে প্রশিক্ষণার্থীগণ পাচ্ছে NSDA সার্টিফিকেট, প্রশিক্ষণ ভাতা।
এছাড়া, ILO ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU)-এর অর্থায়নে খুলনা টিটিসিতে শুরু হয়েছে বিশেষ ইতালি কর্মসংস্থান প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ। চার মাস মেয়াদী এই প্রশিক্ষণে ইতালীয় ভাষা (Italian Language) ও Soft Skills শেখানো হয়। অংশগ্রহণকারীরা পাচ্ছেন বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ, NSDA লেভেল-৩ সনদ, মাসিক ৩,০০০ টাকা ভাতা বা লাঞ্চ সুবিধা, এবং আবাসিক সুযোগ (শর্তসাপেক্ষ)। প্রশিক্ষণ শেষে ইতালীয় নিয়োগদাতাদের (Employer) সঙ্গে সরাসরি ভাইভায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকছে।
একইসঙ্গে খুলনা টিটিসিতে চালু হয়েছে জাপানি ভাষা কোর্স ও কোরিয়ান ভাষা কোর্স, যা বিদেশগামী কর্মীদের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রশিক্ষণগুলো পরিচালিত হচ্ছে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে, আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে।
প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ৩ ও ৬ মাস মেয়াদী বিভিন্ন ট্রেড যেমন— ড্রাইভিং, ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স, ওয়েল্ডিং, প্লাম্বিং, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং, QCM , TDM, WSMO, কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন, গ্রাফিক ডিজাইনসহ আরও নানা কোর্সে ভর্তি চলছে। প্রশিক্ষণার্থীরা BNQF Assessment ও BMET রেজিস্ট্রেশন সুবিধাও পাচ্ছেন।
খুলনা টিটিসির অধ্যক্ষ বলেন, “আমরা তরুণদের আন্তর্জাতিক মানে দক্ষ করে তুলতে কাজ করছি। সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় খুলনা টিটিসি এখন দেশের দক্ষতা উন্নয়নের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।”